নোবিপ্রবি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে লাগাতার অবস্থান

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি আদায়ে লাগাতর অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে, এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার দাবি আদায়ে ২ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেয় শিক্ষার্থীরা, গতকাল আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার দিন মানব বন্ধন করে ও প্রোক্টর এর সাথে সাক্ষাত করে শিক্ষার্থীরা।

 

আল্টিমেটাম শেষ হওয়ায় বুধবার তারা উপাচার্যের সাথে সাক্ষাত করে। উপাচার্য ডঃ এম অহিদুজ্জামান ২ দিনের ভিতর দাবি পূরণের মৌখিক আশ্বাস দেন । তবে শিক্ষার্থীরা লিখিত নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

 

দুপুর ২ টা থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের নিচে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। শিক্ষার্থীদের দাবি সমূহ হলো :
১। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকা অবস্থায় আমাদের ২জন শিক্ষকের আবাসিক রুম থেকে অনুমতি ব্যতিত তাঁদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র বস্তাবন্দি করে স্তুপ করে রাখা হয়। কোনরূপ পূর্ব নোটিশ ছাড়াই তাঁদের জন্য বরাদ্দকৃত রুম বাতিল করা হয়। উল্লেখ্য যে, ইতোপূর্বে আমাদের আরও ২ জন শিক্ষকের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুরুপ ব্যবহার করে। এই প্রেক্ষিতে আমাদের বিভাগীয় উক্ত ৪ শিক্ষককের আবাসন ব্যাবস্থা পূর্বস্থানে পুনর্বহালের আবেদন জানাচ্ছি।

২। বিভাগের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির অগ্রপথিক জনাব মোঃ রুহুল আমিন স্যারকে চেয়ারম্যানশীপ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় আমরা মর্মাহত। চেয়ারম্যান পদে তাঁর অনুপস্থিতি আমাদের বিভাগের যাবতীয় কাজকে শ্লথ করে দিয়েছে। বর্তমানে আমরা প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক কাজ যথাসময়ে করতে পারছি না। উক্ত সমস্যা সমাধানে জনাব মোঃ রুহুল আমিন স্যারকে চেয়ারম্যানশীপে পুনর্বহালের আকুল আবেদন করছি।

৩। সময়জট আমাদের এক বড় সমস্যা, আর এই সময়জট সৃষ্টির প্রধান কারন ক্লাসরুম, শিক্ষক কমনরুম ও ল্যাবরুমের তীব্র সংকট। আমাদের এই অতি মূল্যবান সময়গুলো সংকট নামক ভাইরাস গ্রাস করছে প্রতিনিয়ত। তাই এ সমস্যা সমাধানে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একাডেমিক ভবন – ১ এর ৫ম তলার পুরোটা আমাদের বিভাগের জন্য বরাদ্দের ব্যাবস্থা গ্রহণ করার আবেদন জানাচ্ছি।

৪। ল্যাব নির্ভর বিষয় হওয়া সত্ত্বেও আমরা ৭ বছরেও ল্যাব টেকনিশিয়ান পাই নাই। যার দরুন অনেক ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যাবহারিক কাজ করতে হয়। ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মারাত্মকভাবে আহত হওয়ার উদাহরন রয়েছে। তবু আমরা প্রশাসনের সুদৃষ্টি পাই নাই। উল্লেখ্য যে, ল্যাব টেকনিশিয়ানের অভাবে আমাদের ল্যাবে যে সুবিধা আছে তার পুরোটা ব্যাবহার করতে পারছি না, অধিকন্তু অনেক দামি যন্ত্র অব্যাবহৃত থেকে যাচ্ছে ও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উক্ত সমস্যা সমাধানে অন্তত ২ জন দক্ষ ল্যাব টেকনিশিয়ানের স্থায়ী নিয়োগ চাই। এছাড়াও ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধিসহ সেমিনার ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীতে আমাদের বিষয়ের প্রয়োজনীয় বইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করার আবেদন জানাচ্ছি।

৫। বিভিন্ন সময় আপনি আমাদের সামনে মোবাইলে লাউডস্পিকার দিয়ে আমাদের শিক্ষকদের সাথে কথোপকথন করেছেন বা রেকর্ডকৃত কথোপকথন শুনিয়েছেন। এই বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে যা আমাদের আত্মমর্যাদা ক্ষুন্নের শামিল। এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর জন্য আপনাকে ভুল স্বীকারপূর্বক পরবর্তিতে এই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

এই বিষয়ে উপাচার্য ডঃ এম অহিদুজ্জামান বলেন আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি আমি দাবি মেনে নিবো দুই দিন সময় লাগবে কিন্তু শিক্ষার্থীরা লিখিত চাচ্ছে যা আমার পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।

রিজেন্ট বোর্ড এর অনুমতি ছাড়া জনাব রহুল আমিন কে চেয়ারম্যান পদে বহাল করা সম্ভব নয় তাই সময় লাগবে। তিনি এখন সমস্যা সমাধানে অন্যান্য বিভাগের চেয়ারম্যানদের সাথে মিটিং এ আছেন বলে জানান।#

 

আরএইচ

 

পছন্দের আরো পোস্ট