এমপিও বঞ্চিত ৫ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

MAUSIমানবেতর দিনযাপন করছেন সরকারের এমপিও সুবিধাবঞ্চিত দেশের ৫ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমপিওভুক্ত না করার কারণে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে অনেক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এক যুগেরও বেশি সময় পার করা অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে বলে জানা গেছে।

 

সূত্রমতে, বর্তমানে সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা) সংখ্যা ৫ হাজার ২৪২টি। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন ৭৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। লেখাপড়া করছে প্রায় ১৪ লাখ ছাত্রছাত্রী। অথচ ২০১০ সালে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৫৫টি। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক-কর্মচারী ছিলেন এক লাখ ২০ হাজার। ছাত্রছাত্রী ছিল প্রায় ১৯ লাখ। এ হিসাবে গত ৬ বছরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে ২ হাজার ৮১৩টি।

 

বর্তমানে প্রায় ৫ লাখ এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীকে সরকার প্রতি মাসে ৯৪০ কোটি ৪৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা দিচ্ছে। এই সমপরিমাণ অর্থ এপ্রিল মাসেও প্রদান করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)-এমন তথ্য জানিয়ে শিক্ষকদের অভিযোগ, মাত্র ৭৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী সরকারি বেতনের অংশ (এমপিও) সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

 

২০১৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিদর্শনে গিয়ে নতুন এমপিও নীতিমালা তৈরির তাগিদ দেন। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয় নীতিমালাও তৈরি করেছে। তবে নীতিমালা হলেও মন্ত্রণালয়ের কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই এমপিওর জন্য। এ পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের দাবিতে আন্দোলনে যাচ্ছেন নন-এমপিও ৭৫ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী।

 

এমপিও না পেয়ে দেশের নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম ক্ষুব্ধ। এ প্রসঙ্গে নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. এশারত আলী সাংবাদিকদের বলেন, তীব্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী আমাদের তিন মাসের মধ্যে এমপিওভুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন ২০১২ সালের ডিসেম্বরে। কিন্তু তা আদৌ বাস্তবায়ন হয়নি, এমনকি আগামী ২০১৬-১৭ অর্থবছরের নতুন বাজেটেও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট ঘোষণা থাকবে কিনা সে ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত নই। এ অবস্থায় আগামী ২৫ মে’র মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেওয়া না হলে ২৯ মে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠক থেকে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন শিক্ষকরা।

 

এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সাংবাদিকদের জানান, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে নতুন প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা যাচ্ছে না। কষ্টে থাকা শিক্ষকদের প্রতি ব্যক্তিগতভাবে আমি গভীর সহানুভূতিশীল। এমপিও খাতে অতিরিক্ত অর্থ বাজেটে বরাদ্দ পেলে নতুন করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নেব।

 

 

মাউশির তথ্যানুযায়ী, ২০১০ সালে সর্বশেষ এক হাজার ৬০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়। এর আগে এমপিওভুক্তির কার্যক্রম বন্ধ ছিল ৬ বছর। ২০১৩ সাল থেকে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনুমোদনের সময় শর্ত জুড়ে দেওয়া হচ্ছে, এমপিও সুবিধা দাবি করা যাবে না। ২০১০ সাল থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা বন্ধ আছে।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট