ঢাকা ০৮:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫

মুন্না দ্বাদশ ও স্বপ্না অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছে

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:২০:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মে ২০১৬ ০ বার পড়া হয়েছে

Photo0473রানা প্লাজা ট্রাজেডি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক ভয়ংকর ঘটনা। ২০১৩ সালের ২৪ শে এপ্রিল সকাল নয়টায় রানা প্লাজা ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয় । হাজার হাজার জীবন চাপা পড়ে এই ধ্বংস স্তুপের নিচে। নিঃস্ব হয়ে যায় হাজার হাজার পরিবার।তেমনি একটি পরিবার শিমুলের পরিবার । তিনি আর নেই । কিন্তু রেখে গেছেন একটি অসহায় পরিবারকে । শিমুল স্ত্রী এবং দু’সন্তানকে রেখে গেছেন। যখন ছেলে সাব্বির হোসেন মুন্না অষ্টম শ্রেণীতে এবং মেয়ে স্বপ্না আক্তার রিয়া পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছিল তখনি তারা তাদের বাবাকে রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে হারায় ।

 

আজ শিমুলের স্ত্রী শাহানা দু’সন্তানকে বুকে জড়িয়ে একাই পথ চলছে । তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর মত কেউ নেই । শাহানা আক্তার দু’সন্তান নিয়ে ভাইয়ের বাড়ি থাকে । মুন্না এখন দ্বাদশ শ্রেণীতে এবং স্বপ্না আক্তার অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছে ।

 

স্ত্রী শাহানা স্বামীকে হারিয়ে যেন নিশ্চুপ হয়ে গেছে । ঘটনার সময় সাত্ত্বনা স¦রূপ অনেক কথায় বলেছে অনেকেই কিন্তু পরে কেউ খোঁজ নেয়নি । সন্তানদের পড়াশুনার ব্যাপারে কেউই কখনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি । স্বামী হারানোর বেদনায় কান্না ছাড়া আর যেন কিছুই করার নেই ।

 

২৪ শে এপ্রিল মৃত্যুর আগের ১৪ ই এপ্রিল শাহানা আক্তারকে লাল শাড়ি কিনে দিয়ে সন্তানসহ বৈশাখের মেলায় নিয়ে যায় । এটাই ছিল মুত্যৃর আগে শেষ ঘুরতে যাওয়া । এখনও শাহানার মনে হয় সে বুঝি কোথাও গেছে ফিরে এসে আমাকে ডাকবে । অপেক্ষার প্রহর গুনছি । বিশ্বাস করতে পারিনা । ২৪ এপ্রিল টিভিতে হেডলাইন দেখার পর ফোনেকল দিয়েছি কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল । তার দু’দিন পর শুক্রবার ফোন অন পেয়ে ভেবেছি হয়তো নিরাপদে আছে কিন্তু কেউ ফোন তুলেনি। দৌঁড়ে পুলিশের কাছে গিয়ে বলেছি কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেনি । আটদিন পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম । ১৭ দিনপরেও লাশ না পাওয়ায় অপেক্ষার দিন শেষ হয়েছে । কিন্তু আজও মনে হয় ও ফিওে আসবে । কাদতে কাদতে কথা বলছিলেন শাহানা আক্তার।

 

মেয়ে স্বপ্না আক্তার রিয়া । বাবা তাকে মিনজু বলে ডাকত । বাবা হারানোর পর অস্বাবাভিক হয়ে পরেছে । বাবার কথায় শুধুই কান্না পায় । সবাই বাবা বলে ডাকে শুধু আমরা ডাকতে পারছিনা । আব্বুর লাশটাও তো আমরা দেখতে পায়নি । রানার প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে । শাস্তি দাবি করে।

 

সাব্বির হোসেন মুন্না এখন আর কারও কাছে কিছুই বলতে চায়না । তার তীব্র ক্ষোভ সকলের প্রতি । আটমাস পর ডি এন .এ রিপোর্ট পেয়েছি । অবশেষে বাবার একটা কবর দেখেছি এইটুকুই সাত্ত্বনা।

 

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মুন্না দ্বাদশ ও স্বপ্না অষ্টম শ্রেণীতে পড়ছে

আপডেট সময় : ১২:২০:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মে ২০১৬

Photo0473রানা প্লাজা ট্রাজেডি বাংলাদেশের ইতিহাসের এক ভয়ংকর ঘটনা। ২০১৩ সালের ২৪ শে এপ্রিল সকাল নয়টায় রানা প্লাজা ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয় । হাজার হাজার জীবন চাপা পড়ে এই ধ্বংস স্তুপের নিচে। নিঃস্ব হয়ে যায় হাজার হাজার পরিবার।তেমনি একটি পরিবার শিমুলের পরিবার । তিনি আর নেই । কিন্তু রেখে গেছেন একটি অসহায় পরিবারকে । শিমুল স্ত্রী এবং দু’সন্তানকে রেখে গেছেন। যখন ছেলে সাব্বির হোসেন মুন্না অষ্টম শ্রেণীতে এবং মেয়ে স্বপ্না আক্তার রিয়া পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছিল তখনি তারা তাদের বাবাকে রানা প্লাজা ট্রাজেডিতে হারায় ।

 

আজ শিমুলের স্ত্রী শাহানা দু’সন্তানকে বুকে জড়িয়ে একাই পথ চলছে । তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর মত কেউ নেই । শাহানা আক্তার দু’সন্তান নিয়ে ভাইয়ের বাড়ি থাকে । মুন্না এখন দ্বাদশ শ্রেণীতে এবং স্বপ্না আক্তার অষ্টম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছে ।

 

স্ত্রী শাহানা স্বামীকে হারিয়ে যেন নিশ্চুপ হয়ে গেছে । ঘটনার সময় সাত্ত্বনা স¦রূপ অনেক কথায় বলেছে অনেকেই কিন্তু পরে কেউ খোঁজ নেয়নি । সন্তানদের পড়াশুনার ব্যাপারে কেউই কখনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি । স্বামী হারানোর বেদনায় কান্না ছাড়া আর যেন কিছুই করার নেই ।

 

২৪ শে এপ্রিল মৃত্যুর আগের ১৪ ই এপ্রিল শাহানা আক্তারকে লাল শাড়ি কিনে দিয়ে সন্তানসহ বৈশাখের মেলায় নিয়ে যায় । এটাই ছিল মুত্যৃর আগে শেষ ঘুরতে যাওয়া । এখনও শাহানার মনে হয় সে বুঝি কোথাও গেছে ফিরে এসে আমাকে ডাকবে । অপেক্ষার প্রহর গুনছি । বিশ্বাস করতে পারিনা । ২৪ এপ্রিল টিভিতে হেডলাইন দেখার পর ফোনেকল দিয়েছি কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল । তার দু’দিন পর শুক্রবার ফোন অন পেয়ে ভেবেছি হয়তো নিরাপদে আছে কিন্তু কেউ ফোন তুলেনি। দৌঁড়ে পুলিশের কাছে গিয়ে বলেছি কিন্তু কেউ কিছুই করতে পারেনি । আটদিন পর্যন্ত অপেক্ষায় ছিলাম । ১৭ দিনপরেও লাশ না পাওয়ায় অপেক্ষার দিন শেষ হয়েছে । কিন্তু আজও মনে হয় ও ফিওে আসবে । কাদতে কাদতে কথা বলছিলেন শাহানা আক্তার।

 

মেয়ে স্বপ্না আক্তার রিয়া । বাবা তাকে মিনজু বলে ডাকত । বাবা হারানোর পর অস্বাবাভিক হয়ে পরেছে । বাবার কথায় শুধুই কান্না পায় । সবাই বাবা বলে ডাকে শুধু আমরা ডাকতে পারছিনা । আব্বুর লাশটাও তো আমরা দেখতে পায়নি । রানার প্রতি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে । শাস্তি দাবি করে।

 

সাব্বির হোসেন মুন্না এখন আর কারও কাছে কিছুই বলতে চায়না । তার তীব্র ক্ষোভ সকলের প্রতি । আটমাস পর ডি এন .এ রিপোর্ট পেয়েছি । অবশেষে বাবার একটা কবর দেখেছি এইটুকুই সাত্ত্বনা।