আড্ডায় বিজয় দিবস

- আপডেট সময় : ০৯:০৬:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০ বার পড়া হয়েছে
‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার
সারা বিশ্বের বিস্ময় তুমি আমার অহংকার’
১৯৭১ সালে ভয়াবহ এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে আমাদের সোনার বাংলাদেশ। ত্রিশ লক্ষ বীর শহীদ আর হাজারো মা বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়েছে এই বিজয়। ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মহান বিজয় দিবস।
জাতি হিসাবে আমরা বাঙ্গালীরা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ । আর সেই আবেগটা যদি হয় দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয় নিয়ে তাহলে সেটা কোন পর্যায়ে পৌছায় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
বছর-গুরে আবার এলো বিজয়ের মাস।১৬ ডিসেম্বর, আমাদের মহান বিজয় দিবস।আর এই বিজয়ের মাসে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিজয় দিবসের আবেশ । বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের আড্ডায় এখন আলোচনার প্রধান বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বিজয় দিবস । ক্লাস ও পরীক্ষার ফাঁকে ক্যাম্পাস চত্বর কিংবা ক্যান্টিন আড্ডায় বারবার উঠে আসছে মুক্তিযুদ্ধ , বিজয় দিবস এর ইতিহাস , পটভূমি এবং আমাদের বিজয় অর্জন।
এমনই আড্ডা চলছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধে নিহত মহান বীর শহিদের স্মৃতিতে নির্মিত জাতীয় স্মৃতিসৌধ গণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এর পাশেই অবস্থিত।বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই তরুণেরা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি কিন্তু তাদের রক্তে রয়েছে অকৃতিম দেশপ্রেম আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। এই শিক্ষার্থীরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে শপথ নিয়েই তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করেছে আর বিজয়ের মাসে তাই তাদের আড্ডাটা হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
তাদের একেকজনের ভাষায় বিজয় দিবসের আবেগ এক এক রকম । দ্বীপ সাহার ভাষায়, “বিজয় মানে নিরাপদে ঘর থেকে বের হয়ে আবার নিরাপদে ফিরে আসা।” আবার খাদেমুল ইসলামের ভাষায়, “বিজয় মানে যাদের মহান আত্মত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে তাদের কথা চিন্তা করে সেই আলোকে জীবন পরিচালনা করা, দেশের জন্য কাজ করা।” আর মৌসুমি মিশুর ভাষায়, বিজয় দিবস মানে একটা চেতনা যা লালন করে প্রতিটি বাঙালী তাদের অন্তরে।”
মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভেতরের চত্বরে বসে কথা হচ্ছিল সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মধ্যে, এদের সাথে আরও যোগ দিলেন সহদেব পাল, রানা মিত্র, প্রীতি দাস, সারা বেনজীর, সুজন, শুভ, শাহিদা ইসলাম তামান্না এবং জান্নাতুল ফেরদৌসি সোমা।সহদেব পালের কথায়, “বিজয় দিবস মানে পতাকা নিয়ে দৌড়াদৌড়ি আর মুক্ত পাখির মত ডানা মেলে নীল আকাশে ছুটে চলা।” কথায় কথায় এভাবেই জমে উঠে তাদের আড্ডা ।
আড্ডা চলতে চলতে সময় বয়ে যায় , প্রসঙ্গক্রমে কথা হয় বিজয়ের ৪৪ বছরে আমাদের প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তি নিয়ে ।প্রীতি দাসের মতে, “অপ্রাপ্তির চেয়ে প্রাপ্তির পাল্লাই বেশী ভারী ।মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের এই অল্প কয়েকদিনে আমাদের অর্জন অনেক বেশী । আমরা ধীরে ধীরে বিশ্বের মানচিত্রে নিজেদের গৌরবান্বিত একটি জাতি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছি নানাভাবে।” কিন্তু রানা মিত্র আর সারা বেনজীর তর্ক জুড়ে দেন প্রীতির সাথে ।
রানা বলেন, “আমরা স্বাধীনতাকে চেয়েছি কিন্তু পেয়েছি কিনা তাই নিয়ে আজও আমাদের মনে সংশয় ।নিজের ভিতের প্রশ্ন জাগে, কেননা আজও আমরা নিজের মত করে আমাদের মাতৃভূমিকে পাই নি । শুধু মাতৃভাষায় কথা বলতে পারাটা কখনই স্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ না।” এর সাথে সারা যোগ করেন, “চলমান সহিংসতা, হত্যা আর অপরাধের কথাও । তবে যে যাই বলুক না কেন সবার প্রত্যাশার জায়গা একটাই । একটি সোনার বাংলাদেশ।”
লেখাপড়া২৪.কম/তারেক/এমএএ-০৫১৮